আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে কোটচাঁদপুরের মৃৎশিল্প।

0
193

খোন্দকার আব্দুল্লাহ বাশার, বিশেষ প্রতিনিধি। আধুনিকতার ছোয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে কোটচাঁদপুর উপজেলার মৃৎশিল্প। কিন্তু অস্তিত্ব সংকটে পড়লেও বাপ-দাদার পেশা ধরে রেখেছেন মৃৎ শিল্পীরা একসময় কুমার পাড়াগুলো মাটির কাঁচা গন্ধে থাকত মাতোয়ারা। ব্যাস্ত কুমাররা হিম- শিম খেতেন চাহিদা মেটাতে। হাট বাজারে মাটির তৈরি জিনিস দিয়ে পসরা সাঁজিয়ে বসতেন মৃৎ শিল্পিরা। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়াও শিশুদের খেলনা,সৌন্দর্য বর্ধন সামগ্রীসহ বিভিন্ন বাহারি মাটির তৈরীপাত্র থাকত কুমারপাড়া।তখনকার প্রতিযোগিতার বাজারে বস্তুকে আকর্ষিত করতে দৃষ্টিনন্দিত আলপনার ছোঁয়াও দেওয়া হত। কিন্তু আজ এ সকল সবই অতীত হয়ে যাচ্ছে। গাঁয়ের কুমার পাড়ায় আর কাঁচা মাটির গন্ধ পাওয়া যায় না। আধুনিক সব প্রক্রিয়াজাত থালা বাসন আর প্রয়োজনীয় বস্তুতে হারিয়ে গেছে মাটির গন্ধ।কোটচাঁদপুর উপজেলা ইতিহাস ঐহিত্য নিয়ে গঠিত উপজেলা। এই উপজেলায় নানান ইতিহাস লুকিয়ে আছে। এদের মধ্যে মৃৎ শিল্পের অবাদানও অন্যতম। সময়ের পরিক্রমায় মৃৎ শিল্পের অস্তিত্ব সংকটে পড়লেও প্রায় দুই শতাধিক পরিবার এখনো এই শিল্পের সাথে জড়িতে থেকে বাপ দাদার পেশা ধরে রেখে জীবিকা নির্বাহ করছে। এমনি পরিবার দেখা মিললো পৌর সভার ৭ নং ওয়াডের পাল পাড়ায় গিয়ে দেখা মিললো শ্রী বুদো কুমার পালের সঙ্গে । দুপুর গড়ালেও মাটির জিনিসপত্র তৈরীরে ব্যস্ত সময় পার করছেন। চাকা ঘুরিয়ে শিল্পীর নিপুন হাতে তৈরী করছেন হরেক রকমের পাতিল।একবাড়ীতে একাধিক জন আবারও কখনো বাড়ীর মহিলারা পুরুষদের সঙ্গে কাজ করে সহযোগিতা করছেন।মৃৎ শিল্পীরা জানান ৩০-৩২ বছরেরও অধিক সময় ধরে এই শিল্পের সাথে জড়ীতে থেকে পেশাটিকে ধরে রেখেছে। অনেক কষ্ট করে হলেও এই পেশা ধরে রেখেছে অন্যকোন কাজ তেমন না জানায়। কিন্তু আধুনিকাতর ছোয়ায় প্লাস্টিক দ্রব্যের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার কারণে মাটির পাতিলের চাহিদা কুমে গেছে। ফলে এক রকম ঢিলেঢালা ভাবেই ব্যবসায় করে জীবিকা নির্বাহ করে যাচ্ছেন। বাবার রেখে যাওয়া পেশা ধরে রেখেছেন শ্রী নেপাল পাল। তিনিও জানান প্লাস্টিক আর বাড়ী বাড়ী ফ্রিজের ব্যবহারের কারণে থালা,কলস এসব পাত্রের আর চাহিদা নেই। দইয়ের কাতারী, রুটি খোলা, কুয়োর পাট তৈরী করে আয় করছেন তারা। এসব তৈরী কৃত মালামাল পাইকারি দরে বাসা হতেই নিয়ে যায় মহাজনরা। বাবা মায়ের বাড়ী হতে শিখে আসা কাজ স্বামীর সংসারে এসেও করে চলেছে শ্রী জগা পালের স্ত্রী। তিনি জানান, পুরষের পাশাপাশি বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করেন সংসারে। আগে মাটির পাত্র তৈরী করতে আশেপাশের ডোবা নালা হতে মাটি বিনা পয়সায় নিয়ে এসে তৈরী করতেন তবে বর্তমান সময়ে এই মাটিটুকুও কিনতে হয় তাদের। ফলে তাদের পরিবার নিয়ে কোন রকম দিন চলে যাচ্ছ। তার পরেও নিজেদের পরিশ্রমের টাকায় সংসার চালিয়ে অনেক আনান্দ। কোটচাঁদপুর উপজেলা প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলের আছে মৃৎশিল্পীরা। এদেরকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটু সহযোগিতা করলে অনেক ভালো কিছু করা সম্ভব বলে তারা জানান।