মোঃ রোমান আকন্দ,গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি। অপরূপ সৌন্দর্যের দেশ বাংলাদেশ। সুজলা,সুফলা,শস্য, শ্যামলা এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি সকল দেশের রানী সেজে আমার জন্মভূমি সে যে আমার জন্মভূমি। আসলে উপরোক্ত লাইনগুলো বর্তমানে বইয়ের পাতা ও কাগজের ভাজেই সীমাবদ্ধ।
কিন্তু বর্তমানে গ্রাম বাংলার এ অপরূপ চোখ ধাঁধান রূপ গুলো আর গ্রাম বাংলায় খুঁজে পাওয়া যায় না। দিনের পর দিন আধুনিকায়নের ছোয়ায় এ অপার সৌন্দর্যগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। বিগত কয়েক বছর আগে গাইবান্ধার বিভিন্ন উপজেলার নিভৃত পল্লী গ্রামে আমন ধান কাটার শুরুতে ও ধান কাটার পর চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্য গুলো খুঁজে পাওয়া যেত। গ্রাম বাংলার কৃষানীরা সহ ছোট বড় সব বয়সের নারী-পুরুষেরা দলবেঁধে আমন ধানের জমিতে যেত ধান কুড়ানোর জন্য।
সেখানে তারা ইঁদুরের গর্ত থেকে ধান সংগ্রহ করত। এ ধান সংগ্রহের প্রধান একটি মাধ্যম ছিল যে সব গরীব অসহায়দের জমি নেই তারা ইঁদুরের গর্ত থেকে ধান সংগ্রহ করে নবান্নের উৎসবে পিঠা, পুলী বানাতে মেতে উঠত।কিন্তু দুঃখের বিষয় বর্তমানে আধুনিকায়নের ছোঁয়ায় গ্রাম বাংলা থেকে বিদায় নিতে বসেছে গ্রাম বাংলার ইঁদুরের গর্ত থেকে ধান সংগ্রহের ইতিহাস। তথ্য প্রযুক্তির ছোঁয়ায় আধুনিকায়ন ও আধুনিক রুচিশীলতার কারণে ছোট বড় নারী,পুরুষ সকলের রুচিশীলতার পরিবর্তন ঘটেছে।
সে সময়গুলোতে ছোট-বড় সকলে ঐতিহ্য নিয়ে মাতোয়ারা ছিল কিন্তু বর্তমানে এই সব প্রজন্মেরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে মোবাইল ফোন গুলোতে। মোবাইল ফোনে আসক্ত হওয়ায় বর্তমানে তারা ইতিহাস এবং ঐতিহ্য গুলো হারাতে বসেছে।
গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সরজমিনে উপস্থিত হলে দেখা যায় গ্রাম বাংলার ধানের মাঠগুলোতে শুধুমাত্র ধান চাষী ও কৃষক দ্বারা পরিপূর্ণ। অন্য কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না। ধানচাষীদেরকে ইঁদুরের গর্ত থেকে ধান সংগ্রহের বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা জানায় বর্তমান যুগ আধুনিকায়নের যুগ। আধুনিকতার কারনে এমন ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। তারা আরো জানায় বর্তমানে বিভিন্ন কীটনাশকের ব্যবহারের ফলে ইঁদুরের প্রকোপ কমেছ। যেখানে তেমন ইঁদুরেই নেই আর সেখানেই ইঁদুরের গর্ততো দূরের কথা ধান সংগ্রহকারী ছোট বড় কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না। আমাদের সময় গুলোতে কীটনাশকের ব্যবহার কম থাকায় ইঁদুরের গর্ত বেশি ছিল ও আমরা তেমন আধুনিক ছিলাম না। পড়াশুনার পাশাপাশি দুপুরে স্কুল থেকে ছুটে এসে জমিতে যেতাম ইঁদুরের গর্ত থেকে ধান সংগ্রহের জন্য।
এমন দৃশ্য আমাদের কাছে ভালোই লাগতো। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে আজ তা হারাতে বসেছে। আমরা মনে করি নতুন প্রজন্মের কাছে এমন সব তথ্য তুলে ধরা দরকার । নয়তোবা গ্রাম বাংলার এইসব অবয়ব ও রূপ শুধুমাত্র ক্যামেরাবন্দি আলোক চিএ হয়ে ফুটে উঠবে বাস্তবতাকে ফাঁকি দিয়ে।