ঝিনাইদহ কোটচাঁদপুরে সফল কৃষি উদ্যোক্তা ড.নজরুল ইসলাম

0
247

আব্দুল্লাহ বাশার-(বিশেষ প্রতিনিধি) : জমি অল্প। তাতেই বেশি ফলনের চেষ্টা। পুকুরে হচ্ছে কার্প-জাতীয় মাছের চাষ। সঙ্গে চলছে ঝিনুকে মুক্তার চাষও। পুকুরপাড়ে ৩০ প্রকারের সবজি আর ফলের গাছ। এ যেন সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের চেষ্টা।


ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার শিবনগর গ্রামে গেলে এই খামারের দেখা মেলে। উদ্যোক্তা ড. নজরুল ইসলাম। সাধারণ কৃষক পরিবারে জন্ম তাঁর। ভাইবোনদের মধ্যে সবার ছোট তিনি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণিবিদ্যা বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হন তিনি। এরপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

এরপর নজরুল ইসলাম পাড়ি জমান জাপানে। গবেষণা শুরু করেন সামুদ্রিক প্রবাল ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে। সেখানে সিজুওকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অব সায়েন্স ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর ফিরে আসেন দেশে। যোগ দেন জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা জাইকায়। স্ত্রী, দুই সন্তান আর ভালো চাকরি নিয়ে ভালোই চলছিল জীবন। তবে করোনা মহামারি পাল্টে দিয়েছে সবকিছু। চাকরি হারিয়ে ফেরেন নিজ গ্রাম শিবনগরে।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্র জানান , নজরুল গ্রামে ফিরেই কাজে নেমে পড়েন। নিরাপদ ও বিষমুক্ত খাদ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে গড়ে তোলেন রাইয়ান জৈব কৃষি প্রকল্প। মাত্র ৩ দশমিক ৩ একর জমিতে এই প্রকল্প। এর মধ্যে রয়েছে দুটি পুকুর। পুকুরে চাষ করছেন কার্প-জাতীয় মাছ। সঙ্গে চাষ হচ্ছে ঝিনুকের ভিতর মুক্তারও। পুকুরের পাড়ে চাষ হচ্ছে বিষমুক্ত দেশি-বিদেশি ৩০ প্রকারের সবজি ও ফলমূল। চাষাবাদে ব্যবহার করা হচ্ছে কীটনাশকের পরিবর্তে ভার্মি কম্পোস্ট ও জৈব সার। সবজি ও ফলমূলের মধ্যে রয়েছে দার্জিলিং ও চায়নিজ কমলা, ভিয়েতনামি খাটো জাতের নারকেল, লাল কাঁঠাল, লাল কলা, আপেল, আঙুর, আনার, মিয়াজাকি আম, ড্রাগন, দানব পেঁপে, চুই ঝাল, ইন্ডিয়ান এলাচি ইত্যাদি।

খামারের ভেতর যে পথ তৈরি করা হয়েছে, সেগুলোর নামকরণ করা হয়েছে গাছের নামের সঙ্গে মিল রেখে। যেমন ড্রাগন রোড, অরেঞ্জ রোড, কোকো রোড ইত্যাদি। খামারে বেড়াতে যাওয়া দর্শনার্থীদের সেলফি তোলারও ব্যবস্থা রেখেছেন নজরুল। সেই নির্ধারিত জায়গার নাম দেওয়া হয়েছে সেলফি আইল্যান্ড।

নজরুল ইসলাম আমাদের সংবাদ কে বলেন, ‘জাপানে পড়াশোনার সময় দেখেছি, তারা স্বল্প জায়গায় অধিক ফলনের জন্য নানা কৌশল ব্যবহার করে। তার থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে এই খামারটি করেছি। মানুষকে নিরাপদ খাদ্য সরবরাহের চেষ্টা করছি।’