নিষিদ্ধ থ্রি-হুইলার নিয়ন্ত্রণে অনিয়মের অভিযোগ ঝিনাইদহ হাইওয়ে পুলিশের

0
227

আব্দুল্লাহ বাশার-(বিশেষ প্রতিনিধি) : ঝিনাইদহে হাইওয়ে পুলিশের প্রশ্নবিদ্ধ অভিযান নিয়ে এলাকায় সমালোচনা তৈরি হয়েছে। আরাপপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে অভিযোগ সব মহলের। প্রতিদিন এলাকায় ইজিবাইক ধরে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগী অনেকেই। সেই টাকা আদৌ সরকারি কোষাগারে পড়ছে কিনা এমন সংশয় সব মহলের। ফরিদপুর হাইওয়ে পুলিশের মাদারীপুর রিজিওনের আওতাধীন ঝিনাইদহের আরাপপুর হাইওয়ে থানা। এই থানার অধিনে জেলার সীমান্তবর্তী ঝিনাইদহ-মাগুরা মহাসড়ক,ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা মহাসড়ক ও ঝিনাইদহ কুষ্টিয়া মহাসড়ক।

সড়কে ৩ চাকার যানের উপর প্রতিদিন অভিযান চালাচ্ছে হাইওয়ে পুলিশ। তবে হাইওয়ে থানায় শুধু মাত্র ইজিবাইক আটক রাখতে দেখা গেছে। অন্যান্য থ্রি হুইলার গাড়ি ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। শনিবার দুপুরে ঝিনাইদহ শহরের টার্মিনাল সংলগ্ন আরাপপুর হাইওয়ে থানার অফিসের সামনে ৬টি ইজিবাইক আটক রাখতে দেখা গেছে। শনিবার ঝিনাইদহ-মাগুরা মহাসড়কের পাঁচ মাইল নামক স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে এই গাড়িগুলো আটক করে অভিযানিক দল। আইন অনুযায়ী আটকের পর পজ মেশিনের মাধ্যমে মামলা দেওয়ার কথা। কিন্তু আটককৃত গাড়ি অফিসে নিয়ে এসে সেটেলমেন্ট না হওয়ার পরেই মামলা দিচ্ছে পজ মেশিনে। এই মাসে টাকার বিনিময়ে মুচলেখা নিয়েও গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

আরাপপুর হাইওয়ে থানার ইনচার্জ শাহাবুদ্দিন আজাদ চৌধুরী জানান, “ইজিবাইকের মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশের পর ইজিবাইকের উপর অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। আইন অনুযায়ী পজ মেসিনের মাধ্যমে মামলা দিয়েই ভুক্তভোগী মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে জরিমানার টাকা জমা দিলেই গাড়ি দিয়ে দেওয়া হয়। ” শনিবার সকালে ঝিনাইদহ-মাগুরা মহাসড়কের পাঁচ মাইল নামক স্থান থেকে হাবিবুর পিতা আলাউদ্দিন,গ্রাম তিওর দহ কলোনি পাড়ার ইজিবাইক আটক করা হয়। কিন্তু তিনি অফিসে এসে দালাল মাধ্যমে কথা চালাচ্ছিলেন। সেই সময়ে গণমাধ্যম কর্মীরা হাইওয়ে থানায় প্রবেশ করলে ২টা ৩৬ মিনিটে পজ মেশিনে তার মামলা দেওয়া হয় ( কেস আইডি- ৯৮৪০০২৬২৬৫)। এই অফিসের পাশে কয়েকজন দোকানদারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন ১৫-২০টা ইজিবাইক ধরলেও পজ মেশিনে মামলা হয় অর্ধেকেরও কম। বাকিগুলোর থেকেও টাকা নেওয়া হয় কিন্তু সেই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হয় না। ইজিবাইক ২৫০০ করে ফাইন করা হয়। ভ্যাট ও মোবাইল ব্যাংকিং খরচ বাবদ ভুক্তভোগীর ২৫৮০ টাকা করে খরচ পড়ে। মামলা ভাঙিয়ে তখন থেকেই সেই ইজিবাইক আবারও রাস্তায় চলছে। একটি সূত্র জানিয়েছে, জরিমানা দেওয়ার পর ১ মাস সেই ইজিবাইককে আর ধরেনা পুলিশ।

এছাড়াও সড়কে বিভিন্ন কোম্পানির গাড়ি,আলমসাধু সহ বিভিন্ন অবৈধ গাড়ি চললেও তাদেরকে ধরে না হাইওয়ে পুলিশ।বিভিন্ন সূত্রে অভিযোগ পাওয়া গেছে এইসব কোম্পানি ও সমিতির সাথে মাসিক চুক্তি রয়েছে তাদের। এছাড়াও রাস্তায় অভিযানকালে মাইক্রো প্রাইভেট কার থামিয়ে কাগজপত্রের ফল্ট দেখিয়ে ২০০-১০০০ টাকা আদায় করার অভিযোগ করেছেন অনেকেই। জেলা পুলিশের অধিনে না থাকায় অভিযোগ থাকলেও প্রতিকার পাচ্ছে না রাস্তায় চলাচলকারী বিভিন্ন গাড়ির ড্রাইভারেরা। আরাপপুর থানায় ১৬-১৭ জন জনবল রয়েছে। তারাই প্রধান এই ৩ মহাসড়কের বিভিন্ন সড়ক অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ঝিনাইদহ জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আমাদের কাছেও প্রতিদিন বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ আসে হাইওয়ে পুলিশের অভিযান নিয়ে। কিন্তু হাইওয়ে পুলিশ জেলা পুলিশের সংশ্লিষ্ট নয় বলে আমরাও কোন প্রতিকার করতে পারছি না।

প্রতিদিন হাইওয়ে পুলিশের সামনেই ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা মহাসড়কের জোহান ড্রিম ভ্যালীর সামনে বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতি নিয়োগ দেওয়া এজেন্টরা লাঠি হাতে বসে থেকে ইজিবাইক দাঁড় করিয়ে ৫০ টাকা করে আদায় করে এমন দৃশ্য প্রতিদিন শত শত মানুষের চোখে পড়ে।