ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের পশ্চিম ধর্মপুর গ্রামের বাসিন্দা মনসুর আলী (৬৫)। পেশায় দিনমজুর মনসুর আলীর নেই কোন জমিজমা। স্ত্রী,তিন ছেলে ও তিন মেয়েকে নিয়ে অভাবের সাথে লড়াই করে বেঁচে থাকতে হয়। অভাবের সংসারে স্ত্রী সন্তানের চাহিদা মেটাতে দিনের পর দিন হাড়ভাঙ্গা খাটুনি করে যান মনসুর আলী। আর এতেই সহ্যের চেয়ে অধিক পরিশ্রম করায় শরীরে বাসা বাঁধে নানান রোগ। অর্থাভাবে পরিবারের লোকজন সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে না পারায় ধীরে ধীরে পঙ্গুত্ব বরণ করেন মনসুর আলী।
একসময়ে যার উপার্জনে সংসারের চাকা সচল থাকতো সেই মনসুর আলী এখন সংসারের বোঝা। ছেলে মেয়ের বিয়ে দেয়ার পর তারা আলাদা সংসার পেতেছেন। তাদের টানাটানির সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। এদিকে পঙ্গু মনসুর আলীর রাতদিন কাটে বিছানায় শুয়ে শুয়ে। বছর তিনেক আগ থেকে পঙ্গু মনসুর আলী বাইরের আলো বাতাসে একটু ঘুরে বড়ানোর জন্য প্রায়ই ছেলে-মেয়েদের ডেকে ডেকে একটা হুইলচেয়ারের আবদার করতো। দরিদ্র ছেলেদের সামর্থ না থাকায় গত তিন বছরে তারা পঙ্গু বাবার আবদার মেটাতে বিভিন্ন জনের কাছে হাত পেতেছিল। কিন্ত বাবার জন্য ছেলেদের আকুতির সাড়া দেয়নি কেউই।
অবশেষে বাবার জন্য একটা হুইলচেয়ারের আকুতি জানান উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসানের কাছে।
সন্তানদের আকুতি শুনে তাদের বৃদ্ধ বাবার জন্য হুইলচেয়ার দেয়ার আশ্বাস দেন মেহেদী হাসান।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে এগারো টায় ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী হাসানসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা বৃদ্ধ মনসুর আলী বাড়ীতে গিয়ে তাঁকে হুইলচেয়ার দেন। এসময় বৃদ্ধ মনসুর আলী মেহেদী হাসানের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে হুইলচেয়ার প্রাপ্তির আনন্দে কাঁন্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
মনসুর আলীর ছেলে মোশাররফ বলেন, বাবার চেয়ারের আবদার মেটাতে না পারায় আমাদের নিজেদের উপর আক্ষেপ ছিল।আজ ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী ভাইয়ের জন্য আমাদের আশা পুরণ হয়েছে। বাবা তাঁর স্বপ্নের হুইলচেয়ার পেয়েছেন। দোয়া করি আল্লাহ যেন মেহেদী ভাইয়ের সবসময় মঙ্গল করেন।