বাবার দিকে তাকিয়ে আছে অবুঝ শিশু মেহেদী।

0
316

আব্দুল্লাহ বাশার(বিশেষ প্রতিনিধি) : পুরো গ্রামে চলছে শোকের মাতম। স্বজন ও গ্রামবাসীর আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠছে বাতাস। প্রিয় মানুষকে হারিয়ে সবাই শোকে কাতর। তবে দেড় বছরের মেহেদী জানে না তার বাবা আর পৃথিবীতে নেই। বাবা আর কোনো দিনও ফিরবে না।

বাড়িতে বাবার লাশ থাকলেও দাদার কোলে খেলায় মগ্ন অবুঝ শিশু মেহেদী। কখনও হাসছে আবার কখনও মানুষের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকছে শিশুটি।

সোমবার সকালে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নলভাঙা গ্রামের একটি খাল থেকে মো. পীর আলী (৩৩) নামে দুই মামলার সাক্ষীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি ওই গ্রামের দুটি স্পর্শকাতর মামলার প্রধান সাক্ষী ছিলেন।

নিহত পীর আলী নলভাঙা গ্রামের শামসুল হকের ছেলে ও ওয়ার্ড যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া তিনি গত ২৮ নভেম্বর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার কাষ্টভাঙা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড থেকে ফুটবল প্রতীক নিয়ে মেম্বার পদে নির্বাচন করে পরাজিত হন পীর আলী।

পীর আলী দুটি মামলার সাক্ষী। বিভিন্ন সময় আসামিরা তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিত। নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গত ৪ ডিসেম্বর জিডি করেছিলেন পীর আলী। কিন্তু এক মাস ২০ দিনের মাথায় খাল থেকে পীর আলীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

পীর আলীর স্ত্রী জ্যোৎস্না খাতুন বলেন, সাংসারিক কোনো গোলযোগ ছিল না। প্রতিদিন তিনি রাতে পেয়ারাবাগান পাহারা দিতে যান, আবার রাতেই ফিরে আসেন। রোববার রাতেও গিয়েছিল, কিন্তু রাতে আর ফিরে আসেননি। সকালে খালের পাড়ে তার লাশ পড়ে ছিল। ছোট দুই সন্তানকে নিয়ে এখন কোথায় যাব?

নিহত পীর আলী বাবা শামসুল হক জানান, তার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। সাংসারিক তেমন কোনো বিষয় নেই যে সে আত্মহত্যা করবে। তিনি তার ছেলে হত্যার বিচার চান। ছোট দুই সন্তান এখন কীভাবে মানুষ হবে?

কালীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মতলেবুর রহমান জানান, খালের পাড়ে পড়ে থাকাবস্থায় পীর আলীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার গলায় ফাঁসের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ছাড়া বলা সম্ভব না।