মোঃ রিয়াদ হাসান, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গার জামালহাটের তন্ময় মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ নজর কেড়েছে এলাবাসীর। গ্রামের পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠীর মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে ২০১২সালে প্রতিষ্ঠিত হয় তন্ময় মডেল স্কুল এন্ড কলেজ, মাত্র ১৫ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে পথচলা শুরু হলেও বর্তমানে ছাত্র/ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ২০০শত উর্ধ্বে।
অধ্যক্ষ মোঃ নুরুন্নবী মিয়া প্রতিষ্ঠা করেন ভিন্ন ধরনের এই ব্যতিক্রম ধর্মী বেসরকারী স্কুল। এরই মধ্যে এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এই স্কুলটি। শিক্ষার মান ভালো হওয়ায় সন্তোষ অবিভাবকরা। শুরুতেই গুরুত্ব দেওয়া হয় নিয়ম শৃঙ্খলা ও পড়াশোনার দিকে। এতে সাফল্যও এসেছে। প্রত্যেকটি পি,এস,সি পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে শতভাগ পাশ ও ভালো ফলাফল অর্জন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে আর কখনো পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি স্কুলটিকে।
নিয়মিত শরীর চর্চার পাশাপশি ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে চিত্রাঙ্কন,বিতর্ক প্রতিযোগিতা সহ বিভিন্ন আয়োজন করা হয়। সাপ্তাহিক পরিক্ষা,মাসিক মূল্যায়ন পরিক্ষা ও হাতের লেখা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে স্কুল কর্তৃপক্ষ। লেখাপড়ার পাশাপাশি নিয়মিত সংস্কৃতির চর্চায় স্কুলটি ব্যাপক নজর কেরেছে। এছাড়াও ধর্মীয় শিক্ষারও ব্যবস্থা আছে স্কুলটিতে। বিদ্যালয় মূখী করতে শ্রেণী কক্ষ ও দেওয়ালে কবি,পাঠ্য বইয়ের গল্পের দৃশ্য, বর্ণমালা, জাতীয় পতাকা,স্মৃতিসৌধ,শহীদ মিনার, ভাষা শহীদ বীর শ্রেষ্ঠদের পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। মিনা-রাজুর স্কুলে যাওয়ার দৃশ্যও দেখার মতো। এ
সব সাফল্যর মাধ্যমে তন্ময় মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকায় বেশ পরিচিত লাভ করে।শিক্ষার্থীরা জানায়, কঠোর নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলে নিয়মিত পড়াশোনা ও শিক্ষকদের আন্তরিকতার কারণে প্রতিবছরই তারা শতভাগ পাশ ও ভালো রেজাল্ট করতে পারছে। সেই সঙ্গে সন্তানদের ধারবাহিক ফলাফলে অভিভাবকরাও সন্তুষ্ট। তন্ময় মডেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ নুরুন্নবী মিয়া জানান, সন্তান আপনার তাকে মানুষ হিসেবে গড়ানোর দ্বায়িত্ব আমাদের। (Better education better life), আমরা মানুষ গড়ার কারিগর। আমরা গর্বিত আমরা শিক্ষক। শিক্ষার মান নিয়ে তিনি কখনো আপস করেননি। শিক্ষক নিয়োগ ক্ষেত্রে ডিগ্রিধারী মেধাবীদের অগ্রাধিকার দিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের রয়েছে ডিজিটাল মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও লাইব্রেরি।
তিনি আরো বলেন, অভিভাবকদের সাথে সু-সম্পর্ক বজায় রাখতে মা সমাবেশ ও অভিভাবক সমাবেশ করে থাকি। নিয়মিত শ্রেণি পরীক্ষা, শ্রেণি মনিটরিং এর ব্যবস্থা করেছি। সমগ্র পাঠ্য বই যাতে খুটি নাটি পড়ানো হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখার ব্যবস্থা করেছি। নোট বই ও গাইড বইয়ে নির্ভরশীলতা কমিয়েছি। শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনের পাঠ ভালভাবে শিখল কিনা শিক্ষক তা শ্রেণিকক্ষেই নিশ্চিত করবেন সে ব্যবস্থা করেছি।
পরিশেষে তিনি আরো বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশের লেখাপড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে পাঠ্যবই মুখস্থ করা আর সার্টিফিকেটকেন্দ্রিক। এই ভুল জায়গা থেকে আমাদের সবাইকে বেড়িয়ে আসতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব ছেলেমেয়েদের এক্সট্রা কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটিজে ফিরিয়ে আনতে হবে। জিপিএ-৫-এর পেছনে দৌড়ানো বন্ধ করতে হবে। তাহলে অনেক প্রতিভাবান ও মেধাবী ছেলেমেয়ে বের হয়ে আসবে। না হলে জাতি ক্রমেই বিকলাঙ্গ হবে।