মোঃ মাহমুদুল হাসান; মুক্তাগাছা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার গোলায়তাজপুর গ্রামে কৃষি জমিতে সেচ কাজের জন্য একাধিক গভীর নলকূপ থাকা সত্বেও প্রভাবখাটিয়ে ক্যাচম্যাপ এরিয়ার ভেতরে সরকারী নীতিমালা অমান্য করে অগভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে সেচ নীতিমালা সম্পূর্ণরূপে অমান্য করা হয়েছে। শুধু তাইনয় প্রভাব খাটিয়ে ড্রেনের উপর দিয়ে পাইপের মাধ্যমে জোর পূর্বক পানি সরবরাহ করছে। এতে ভূগর্ভস্থ পানি কমে গিয়ে সেচে বিঘ্ন ঘটার আশংকা রয়েছে। এর ফলে কৃষি উৎপাদন ব্যহত হবার পাশাপাশি স্থানীয়দের মাঝে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটারও আশংকা করছেন এলাকাবাসী।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে খোঁজ নিয়ে জানাযায়, উপজেলার গোলায়তাজপুর গ্রামে সোনালী ব্যাংকের ঋণের মাধ্যমে দীর্ঘ দিন ধরে ৩৪৫ নং গভীর নলকূপটি স্থাপন করা হয়। মো. মুছা সরকার ম্যানেজার হিসেবে প্রায় ত্রিশ বছর ধরে ৮৬৭নং লাইসেন্স মূলে এটি পরিচালনা করে আসছেন। গভীর নলকূপটির সেচের মাধ্যমে এলাকায় কৃষি ফসল উৎপাদন হয়ে আসছে। একই গ্রামের মৃত মোকাররম আলী তালুকদারের পুত্র মো. নজর আলী তালুকদার নিয়ম বহির্ভূতভাবে সেচ এরিয়ার ভেতরে নতুন করে একটি অগভীর নলকূপ স্থাপনের চেষ্টা চালায়। জানতে পেরে গত ২৮ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মুছা সরকার নতুন নলকূপের লাইসেন্স না দেয়ার জন্য সেচ কমিটি বরাবরে আবেদন করেন। যার প্রেক্ষিতে নজর আলী তালুকদারের লাইসেন্স বাতিল করে ও বিদ্যুৎ সংযোগ না দিতে উপজেলা সেচ কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। পরবর্তীত তথ্য গোপন করে সরকারী নির্দেশনা অমান্য করে গোলায়তাজপুর মৌজার ১০৬২ নং তাগে অবৈধভাবে উক্ত নজর আলী তালুকদার রাতারাতি একটি অগভীর নলকূপ স্থাপন করে। এনিয়ে পূনরায় এলাকাবাসীর পক্ষে মূছা সরকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবরে অভিযোগ করেন। এর আগে বিএডিসি মুক্তাগাছা উপজেলা ইউনিটের উপসহকারী প্রকৌশলী(ক্ষুদ্রসেচ) ইসরাইল হোসেনের সরেজমিনে তদন্তপূর্বক দাখিলকৃত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে নজর আলী তালুকদারের অগভীর নলকূপের লাইসেন্স নং-৮৫৭ বাতিল করা হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয় নজর আলী তালুকদারের গোলায়তাজপুর মৌজার জেএল -২২১, দাগ নং-১০৬৩, খতিয়ান ৩০০, লাইসেন্স ৮৫৭ এর বোরিং সরকারী বিধিমোতাবেক স্থাপন করা হয়নি।
তখন বিএডিসি (ক্ষুদ্র সেচ) কর্তৃক প্রেরিত কারন দর্শানো নোটিশের নজর আলী তালুকদার একটি মিথ্যা জবাব প্রদান করেন। সেই লিখিত জবাবে নজর আলী স্বাক্ষর দেখানো হয়েছে। বাস্তবে নজর আলী তালুকদার কোন স্বাক্ষর দিতে পারেন না। তিনি সকল ক্ষেতে টিপসহি দেন।
পরে নজর আলী জমির দাগ পরিবর্তন করে অন্যত্র দেখিয়ে এবং পাশ্ববর্তী গভীর নলকূপগুলো থেকে বোরিং দূরত্বের মিথ্যা তথ্য দিয়ে কৌশলে বিভিন্ন মহল ম্যানেজ করে অবৈধভাবে অগভীর নলকূপ স্থাপন ও লাইসেন্স নেন। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যেকোন সময় বড় ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
বিএডিসি মুক্তাগাছা ইউনিট দপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (ক্ষুদ্রসেচ) মোঃ ইসরাইল হোসেন জানান, নজর আলী তালুকদারের নলকূপ আসলেই সরকারী নীতিমালা মত সঠিক হয়নি। এটি নিয়মের মধ্যে পড়ে না। তার লাইসেন্স বাতিলের দাবীতে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সে অনুযায়ী সহকারী ম্যাকানিক আমিরুল ইসলামকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে আমিরুল ইসলাম জানান, বোরিংয়ের দাগ ঠিক আছে কিন্তু দূরত্ব হেরফের হয়েছে। তিনি উভয় পক্ষ থেকে ফসল আবাদের দিক বিবেচনা করে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করার পরামর্শ দিয়েছেন।
এলাকাবাসী দ্রুত সময়ের মধ্যে নজর আলী তালুকদারের অবৈধ প্রক্রিয়ার প্রদত্ত লাইসেন্স বাতিল করে দ্রুত সেখান থেকে বোরিং করা অগভীর নলকূপটি অন্যত্র সরানোর দাবী জানিয়েছেন।