কাজিরহাটে জমিজমা’র জেরে প্রতিপক্ষের রগ কর্তন

0
190

মেহেন্দিগঞ্জ প্রতিনিধি ঃ
ধন সম্পদ ও জমিজমা যেনো একটা সময় কাল হয়ে দাঁড়ায়। এরই প্রমান আবারও মিললো বরিশাল জেলার কাজিরহাট থানার ০১ নং আন্দারমানিক ইউনিয়নের ০৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোকসেদুর রহমান’র সাথে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গতো ১৮/০৬/২০২১ ইং তারিখ রোজ শুক্রবার রাত ৪.৩০ টার দিকে সন্ত্রাসী নজরুল বাহিনীর প্রধান নজরুল ইসলাম, দুলাল, চান্দু, নান্নুসহ আরো ১২-১৫ জনের সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে দুই অটোতে করে মোকসেদুর রহমান’র বাড়িতে ঢুকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় বলে জানা যায়।



ভুক্তভোগী মোকসেদুর রহমান’র স্ত্রী সাইমুন আক্তার জানান, রাত ৪ঃ৩০ এর সময় আমি আর আমার শাশুড়ী ফজরের নামাজরত অবস্থায় ছিলাম, এমন সময় নজরুল ও তার সাথে থাকা ১২-১৫ জন কোন কথাবার্তা না বলেই হটাৎ ঘরে ঢুকে মশারীর নিচে শুয়ে থাকা আমার স্বামীকে এলোপাতাড়ি সাবল দিয়ে আঘাত করতে থাকে পিঠে, বুকে, হাটুতে । ছুরি দিয়ে ডান পায়ের রগ কেটে দেয় নজরুলের সন্ত্রাসী বাহিনী। এতেও ক্ষ্যান্ত হন নি, ছুরি দিয়ে রানসহ একাধিক স্থানে কুপিয়ে জখম করে মোকসেদুর রহমান’র। ঘটনাস্থলেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন মোকসেদুর।

ভুক্তভোগির স্ত্রী আরো বলেন, তাদের সবার হাতে ছিলো দেশীয় অস্ত্র যেমন, রাম দা, ছুরি, কুড়াল, শাবল, লাঠি ও চাপাতি ইত্যাদি । এরপর তারা আমাকে ও বৃদ্ধা শাশুড়ীকে টেনে হিচড়ে নিয়ে যায় বাগানে, সেখানে নিয়ে বেধে রাখেন সন্ত্রাসী নজরুল ইসলাম সহ বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরা।

পরে স্থানীয়দের সহায়তায় দ্রুত চিকিৎসার জন্য তাকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানো হয়।


এছাড়া তিনি আরো অভিযোগ করেন যে, তাদের উপর হামলা শেষে নজরুল বাহিনী, মোকসেদুর রহমান এর ঘর বাড়ি ভাঙচুর করে আসবাবপত্র পুকুরে ফেলে দেয়, এবং ঘরে থাকা ধান বিক্রির প্রায় লক্ষাধিক টাকা ও ২ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়।

শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় যে, মোকসেদুর রহমান’র পায়ের রগ কাটা, দুই পা হাটুর নিচ থেকে ভাঙ্গা, হিপ জয়েন্ট ভাঙ্গা, এবং হাত, পা শরির সব ফুলে গেছে। এবং মোকসেসুর রহমান’র অবস্থা আশংকাজনক থাকার কারনে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়।




এ ব্যাপারে কাজিরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ’র সাথে আলাপকালে এই প্রতিবেদককে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, গতো ২০-০৬-২০২১ ইং তারিখ রোজ রবিবার কাজিরহাট থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলা নং ০৯। এবং মামলায় ধারা দেওয়া হয় ১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/৩২৩/৩২৫/৩২৬/৩৫৪/
৩৭৯/৪২৭/৫০৬।


এ ব্যাপারে আন্দারমানিক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী শহিদুল ইসলাম’র সাথে আলাপকালে তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, ঘটনার সম্পর্কে আমি জ্ঞাত, এবং ঘটনার সময় আমি কাজিরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ কে ফোন দিয়ে ফোর্স পাঠাতে বলা হয়, তবে ঘটনাস্থলে ফোর্স আসতে আসতে সকাল ৯ টা বাজে। এবং নজরুল ইসলাম ও মোকসেদুর রহমান এদের সমস্যা টি নিয়ে এলাকা পর্যায়ে বেশ কয়েকবার শালিসি মীমাংসার আয়োজন করা হলেও কোন সুরাহা হয় নি। সর্বোপরি সকল শালিসি’দের উপস্থিতিতে এবং জমির সকল কাগজপত্র দেখে মোকসেদুর রহমান কে জমি ভোগ দখলের অনুমতি দেওয়া হলে নজরুল ইসলাম উক্ত শালিসি মানবে না বলে উঠে যায়।


এ ব্যাপারে শালিসি’দার আব্দুল সত্তার শিকদার’র সাথে কথা বলার সময় প্রতিবেদককে জানান, জমির সকল কাগজপত্র আমি দেখেছি, এ জমি আইন অনুযায়ী মোকসেদুর রহমান পায়। কিন্তু নজরুল ইসলাম উক্ত শালিসি অবমাননা করেন। এবং ভোর রাতে মোকসেদুর রহমান’র উপর হামলা চালায়। মোকসেদুর রহমান এখন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।

মোকসেদুর রহমান’র বৃদ্ধ মায়ের উপর হামলা করা হয় এবং তার ডান হাত ভেঙ্গে দেয় নজরুল বাহিনী ও তার সদস্যরা। মোকসেদুর রহমান’র মা এর বিচার চেয়েছেন।